আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লাঙ্গলে বিশ্বাস নেই!


নিজস্ব প্রতিবেদক
করেন জাতীয় পার্টি। এরশাদের এ দলে একাদিক পদ রয়েছে লিয়াকত হোসেন খোকার। এ পার্টির নমিনেশনেই এমপি হয়েছেন দুইবার। এরপরও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে তার তেমন বিশ্বাস নেই বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
খোকার দখলে জাতীয় পার্টির একাধিক পদ রয়েছে। তিনি একাধারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, অতিরিক্ত মহাসচিব, আবার স্বেচ্ছাসেবক পার্টিরও সভাপতি। দলের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক কমিটির নেতৃত্বেও রয়েছেন তিনি। এ পার্টির কল্যাণেই ১০ম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২য় বারের মতো নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনে এমপি হয়েছেন তিনি। তবে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের দয়ায় তিনি এমপি হয়েছেন। স্ত্রীকে নিয়ে খোকার একটি কর্মকান্ডে তাই মনে করেন সচেতন মহল।
সম্প্রতি সোনারগাঁ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে খোকা এমপির স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতের নাম উঠে আসে। প্রথমে বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান ডালিয়াকে সমর্থনের কথা জানান। পরে খোকা এমপিও দৌড়ঝাপ শুরু করেন নিজের স্ত্রীর মনোনয়ন নিশ্চিত করতে। তবে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন না নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে তা চাইছেন। ইতিমধ্যে এ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। ১৯ ডিসেম্বর সোনারগাঁ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইয়াপাড়া দীঘিরপাড়া এলাকায় এক কর্মীসভায় সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাফুজুর রহমান কালাম বলেছেন, আমাদের সোনারগাঁ পৌরসভা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী একটি পৌরসভা। আমরা চাই পৌরসভার মানুষ পৌরসভাবাসী থেকে যোগ্য কাউকে নির্বাচিত করুক। পৌরসভার মানুষ অন্য এলাকার কাউকে মেনে নিবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাদেক সাহেব ওনার ব্যর্থতা ঢাকতে হায়ার করে প্রার্থী এনে নিজের বোন বানিয়ে পৌরসভার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে চায়। খোকা এমপিকে উদ্দেশ্য করে কালাম বলেন, একটা দলের এতো বড় নেতা হওয়ার পরেও উনার দলের মার্কার প্রতি আস্থা নেই কেনো? আপনার এত লোভ কেন? আপনি এমপি এখন আপনার মেয়রও লাগবো। কালাম বলেন, আমি দ্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, নির্বাচন শুরু হবে, নির্বাচন শুরু হলে কারো মায়ের বুকের পাটা নেই, নৌকার সামনে এসে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে।
সূত্র জানায়, খোকা তার স্ত্রীকে আওয়ামী লীগের মেয়র মনোনয়ন এনে দিতে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। তবে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের কাউকে না জানিয়ে এমনকি তার উত্থানের পেছনে যাদের অবদান সেই ওসমান পরিবারকেও এড়িয়ে ঢাকায় লবি করছেন বলে সূত্র জানায়।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, খোকা নিজেও জানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিলে লাঙ্গল টিকবে না। কেননা সোনারগাঁয়ে নৌকা ও ধানের শীষের ভোটারের সংখ্যাই বেশী। তিনি দুইবার এমপি হলেও জাতীয় পার্টিকে তেমনভাবে গুছাতে পারেননি। যেমনটা নাসিম ওসমান করেছিলেন। আর এ কারনে তিনি আওয়ামী লীগের কৃপা চাইছেন স্ত্রীকে মেয়র করতে। লাঙ্গলে যে তার বিশ্বাস নেই তা জাতীয় পার্টির অনেক নেতাও স্বীকার করেছেন। তাদের মতে, খোকা ধুর্ত প্রকৃতির রাজনীতিক। সব সময়ে ভালো অবস্থানে থাকতে চায়।